একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

Breaking News :
কাল বৈশাখী

শুক্রবারের আবহাওয়া পূর্বাভাস: বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে (ঘূর্ণিঝড় আপডেট ১১)

Blog Image
Email : 4817k 12k

শুক্রবারের আবহাওয়া পূর্বাভাস: বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে

ঘূর্ণিঝড় আপডেট ১১ (ডিসেম্বর ১, ২০২৩)

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপটি শক্তিশালি হয়ে ও সংগঠিত হয়ে অবশেষে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে অবস্থান করছে আজ শুক্রবার দুপুর ২ টার সময়। আজ শুক্রবার দুপুর ১ টার সময় নিম্নচাপটির কেন্দ্র প্রায় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ই প্রায় ৮৮ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশের উপরে অবস্থান করছিল। জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে সুস্পষ্ট লঘুচাপটি গত ২৪ ঘন্টায় অনেক সংগঠিত হয়ে স্পষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেওয়া শুরু করেছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের চার পাশের ঘূর্ণ্যমান মেঘের বলয় স্পষ্ট ভাবে দৃশ্যমান।

নিম্নচাপটি বর্তমানে যে স্থানে রয়েছে তার আশ-পাশে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য খুবই অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করতেছে। বিশেষ করে নিম্নচাপ কেন্দ্রের চার-পাশের সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা ২৯ থেকে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বিরাজ করতেছে যা ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি ও স্থায়িত্বের জন্য অন্যতম প্রভাবক হিসাবে ভূমিকা পলান করে।

একি সাথে নিম্নচাপটি যে স্থানে অবস্থান করতেছে সেই স্থানে বঙ্গোপসাগরের গভীরতা অপেক্ষাকৃত বেশি। ফলে ঐ স্থানে ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানির গভীরতা অনেক বেশি। অনেক গভীর পর্যন্ত গরম পানি থাকার কারণে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান পাবে আগামী ৩ দিন।

নিম্নচাপটি বর্তমানে যে স্থানে রয়েছে তার আশ-পাশে উল্লম্ব বায়ুশিয়ার এর মান ৫ থেকে ১৫ নটিকাল মাইল বিরাজ করতেছে। বায়ুশিয়ারের এই মানকে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি ও স্থায়িত্বের জন্য সবচেয়ে গুরুত্ণপূর্ন প্রভাবক হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে।

নিম্নচাপটি আগামী ২৪ ঘন্টায় আরও শক্তিশালি হয়ে আগামীকাল শনিবার দুপুর ১২ টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। নিম্নচাপটি বর্তমান অবস্থান থেকে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঘন্টা প্রায় ১০ কিলোমিটার বেগে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে নিম্নচাপ কেন্দ্র ভারতের চেন্নাই বন্দর থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থান করছিল আজ সকাল ৯ টার সময়। সম্ভাবনা রয়েছে যে আগামীকাল দুপুরের মধ্যে নিম্নচাপটি কিছুটা দিক পরিবর্তন করে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলের দিয়ে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো। ডিসেম্বরের ৩ তারিখের মধ্যে পূর্নাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

চলমান সম্ভব্য ঘূর্ণিঝড়টির শেষ হওয়ার পূর্বে আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম দিকে নতুন একটি লঘুচাল সৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে আমেরিকান ও ইউরোপিয়ান আব হাওয়া পূর্বাভাস মডেল। নতুন লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা নাই বলেই চলে। তবে চলমান নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্যের উপর দিয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বৃষ্টি আকারে বাংলাদেশের উপর দিয়ে অতিক্রম করার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। প্রথম ঘূর্ণিঝড়টি কারণে সৃষ্ট বৃষ্টিপাত যখন বাংলাদেশের উপর দিয়ে অতিক্রম করবে (৬ থেকে ৮ ই ডিসেম্বর) সেই একই সময় মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ও কক্সবাজার জেলার উপকূলের উপর দিয়ে অন্য নতুন একটি লঘুচাপ অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে যার কারণে বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর উপরে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

 

 

Related Post