একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

কাল বৈশাখী

ঘূর্ণিঝড় রেমাল আপডেট ১৭ (মে ২৬, ২০২৪): রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে বাংলাদেশের ৮ টি বিভাগের উপরে।

Blog Image
Email : 45732k 12k

ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের কারণে বাংলাদেশের ৮ টি বিভাগের উপরে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমাল অস্বাভাবিক ধীরগতিতে বাংলাদেশ ত্যাগ করবে (২ দিনের বেশি বাংলাদেশের আকাশে থাকার সম্ভাবনা)। ঘূর্ণিঝড় রেমাল খুবই ধীর গতিতে বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। ঘূর্ণিঝড়টির কারণে সৃষ্ট ঘূর্ণ্যমান মেঘমালা মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশের উপরে থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণে অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়গুলো অপেক্ষা ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে বাংলাদেশের ৮ টি বিভাগের উপরেই ব্যাপক পরিমাণ বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর কেন্দ্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার উপর দিয়ে স্থল ভাগে প্রবেশের প্রবল সম্ভাবনা (৯০% এর বেশি) দেখা যাচ্ছে। এর পরে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, আলিপুর দুয়ার, কুচবিহার জেলা ও মেঘালয় রাজ্যের উপর দিয়ে আসাম রাজ্যে প্রবেশের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। স্থল ভাগে প্রবেশের পরে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর কেন্দ্র যখন খুলনা ও ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে অতিক্রম করবে তখনও বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

ছবি: ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে বাংলাদেশের ৮ টি বিভাগের উপরে মে মাসের ১৮ তারিখ রাত ১২ টা পর্যন্ত সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।

ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগের উপরে নিম্নে উল্লেখিত পরিমাণে বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে ২৮ এ মে দিবাগত মধ্য রাত পর্যন্ত।

খুলনা বিভাগ: ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার
বরিশাল বিভাগ: ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিমিটার
সিলেট বিভাগ: ৪০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার
ঢাকা বিভাগ: ২০০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার [পদ্মা নদীর পশ্চিম পাশের জেলাগুলোর উপরে ২৫০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার ও ঢাকার উত্তর ও পূর্ব পাশের জেলাগুলোর উপরর ২০০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার]
রাজশাহী বিভাগ: ২৫০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার
ময়মনিসংহ বিভাগ: ৩৫০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার
চট্টগ্রাম বিভাগ: ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার
রংপুর বিভাগ: ১৫০ থেকে ২০০ মিলিমিটার

 

ঢাকা শহরে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ার আশংকা


ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্র যেহেতু ঢাকা শহরের উপর দিয়ে অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে তাই আগামীকাল সোমবার ও মঙ্গলবার ঢাকা শহরের উপরে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির আশংকা করা যাচ্ছে। যেহেতু সকল আবহাওয়া পূর্বাভাস মেডেল আগামীকাল সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাতের ( ২ দিন প্রায় ৩০০ মিলিমিটার) প্রবল সম্ভাবনা নির্দেশ করতেছে ফলে ঢাকা শহরে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ার আশংকা করা যাচ্ছে। ফলে পুরো ঢাকা শহরে ব্যাপক পরিমাণে যানজটের সৃষ্টি হয়ে পুরো শহরের যাতায়াত ব্যবস্হায় স্থবিরতার সৃষ্টি হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। ফলে আগামীকাল সোমবার ঢাকা শহরের মানুষের দুর্দশা কমিয়া আনার জন্য ঢাকা শহরের স্কুল-কলেজ গুলোর দৈনন্দিন ক্লাস (জরুরী পরীক্ষা ছাড়া) ১ থেকে ২ দিন বন্ধ ঘোষণা করে ঢাকা শহরের কর্মজীবী ও অফিস-গামী মানুষের যাতায়াত ব্যবস্হার নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।

ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে শীতকালে তুষার ঝড়ের সময় শহরের স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয় ও শুধুমাত্র জরুরী সেবা সমূহ চালু রাখা হয় নাগরিকদের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে। ঢাকা শহরেও একই ধরনের ব্যবস্হা গ্রহণ করা যেতে পারে আগামী সোম ও মঙ্গলবার।

Related Post