একটি বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস ওয়েবসাইট যা বাংলা ভাষায় আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান করে থাকে একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল, কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ ও রাডার থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে।

আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলোর পূর্বাভাষ কোন দেশে বেশি কোন দেশে কম নির্ভুল হয় কেন?

Blog Image
Email : 235k 12k

কেন একই আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে অনেক সঠিক ভাবে আবহাওয়া পূর্বাভাস করতে পারলেও বাংলাদেশের কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উপর করতে পারে না? 

আপনারা অনেক সময়ই আমার কাছে জানতে চান কিংবা আমি নিজেও আমার লেখাগুলোতে উল্লেখ করি যে একই আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল আমেরিকা ও ইউরোপের দেশ গুলোতে যে পরিমাণ নির্ভুলতা সহকারে আবহাওয়া পূর্বাভাস করতে পারে সেই একই পরিমাণ সঠিক ভাবে বাংলাদেশে কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উপর করতে পারে না।   

 [img|https://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/mostofa_kamal/mostofa_kamal-1659035274-a7e07aa_xlarge.jpg] ছবি কৃতজ্ঞতা: Dr. Robert Rohde, Lead Scientist, BerkeleyEarth

উত্তর টি হলও উপরের ছবিটি। ছবির প্রতিটি নীল বিন্দু নির্দেশ করতেছে একটি আবহাওয়া স্টেশন যে স্থানে দৈনন্দিন ভাবে আবহাওয়া বিষয়ক বিভিন্ন সূচক যেমন তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, বায়ু চাপ, বায়ু প্রবাহের দিক, বাতাসে জ্বলিয়বাম্পের পরিমাণ ইত্যাদি মাপা হয় ও সেই সূচকগুলো বিশ্বের প্রধান-প্রধান আবহাওয়া সংস্থা গুলোর সাথে শেয়ার করা হয়। ঐ তথ্যগুলো দিনে কমপক্ষে ২ বার থেকে ৪ বার করে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল গুলোকে  সরবরাহ করা হয় (আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল গুলো বিভিন্ন গাণিতিক সমীকরণ ("Differential equation: In mathematics, a differential equation is an equation that relates one or more unknown functions and their derivatives") দ্বারা গঠিত যে সমীকরণ গুলোর সমাধান করার জন্য বাউন্ডারি কন্ডিশন দিতে হয় নিয়মিতভাবে ( কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর-পর)) যা দেখে আবহাওয়া পূর্বাভাষ মডেল গুলো নতুন পূর্বাভাষ তৈরি করে।  

যে স্থানের প্রতিদিনের আবহাওয়া বিষয়ক বিভিন্ন সূচকগুলো দিনে যতবার সংগ্রহণ করা হবে ও সেই তথ্য যত বেশিবার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল গুলোকে  সরবরাহ করা হবে সেই স্থানের আবহাওয়া পূর্বাভাস তত বেশি সঠিক হবে। আমেরিকা, কানাডা ও ইউরোপের দেশগুলোতে অটোমেটিক আবহাওয়া স্টেশন এর মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় উপরে উল্লেখিত আবহাওয়া বিষয়ক বিভিন্ন সূচক যেমন তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, বায়ু চাপ, বায়ু প্রবাহের দিক, বাতাসে জ্বলিয়বাস্পের পরিমাণ ইত্যাদি মাপা হয় ও সেই সূচকগুলো বিশ্বের প্রধান-প্রধান আবহাওয়া সংস্থা গুলোর সাথে শেয়ার করা হয়। 

উপরে উল্লেখিত ছবিতে দেখতেই পাচ্ছেন বাংলাদেশে আবহাওয়া স্টেশনের ঘনত্বের পরিমাণ। যে স্টেশন গুলো রয়েছে সেই স্টেশন গুলো তথ্য সংগ্রহ করে মানুষ দ্বারা দিনে ১ বা ২ বার। সেই তথ্যগুলো বিশ্বের প্রধান-প্রধান অবহাওয়া সংস্থা গুলোর সাথে শেয়ার করা হয় না। এই কারণে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো যখন রান করা হয় তখন বাংলাদেশের উপরের আবহাওয়া বিষয়ক বিভিন্ন সূচক যেমন তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, বায়ু চাপ, বায়ু প্রবাহের দিক, বাতাসে জ্বলিয়বাস্পের পরিমান ইত্যাদি তথ্য নিয়মিত ভাবে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলোকে সরবরাহ করা যায় না যে কারণে একই আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল আমেরিকা ও ইউরোপের দেশ গুলোতে অনেক সঠিক ভাবে আবহাওয়া পূর্বাভাস করতে পারলেও বাংলাদেশের কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উপর করতে পারে না। আশাকরি বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে পেরেছি। 


Related Post